ক্যান্সারের কারণ কি?

You are currently viewing ক্যান্সারের কারণ কি?

ক্যান্সার হল অস্বাভাবিক কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি ও বিস্তারের ফলে সৃষ্ট একটি জটিল রোগ। এর কোনো নির্দিষ্ট একক কারণ নেই; বরং, এটি সাধারণত বংশগত, পরিবেশগত এবং জীবনযাত্রার বিভিন্ন কারণের মিলিত প্রভাবের ফলে ঘটে। এই বিশ্লেষণে, আমরা ক্যান্সারের বহুমাত্রিক প্রকৃতি বুঝতে চেষ্টা করব এবং এর বিকাশে ভূমিকা রাখা বিভিন্ন উপাদানগুলি পরীক্ষা করব।

বংশগত উপাদান

জিনগত পরিবর্তন:

বংশগত উপাদান ক্যান্সারের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিছু মানুষ তাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট জিনগত পরিবর্তন অর্জন করে, যা তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, BRCA1 এবং BRCA2 জিনের পরিবর্তন স্তন এবং ডিম্বাশয় ক্যান্সারের সাথে সরাসরি যুক্ত। এই পরিবর্তনগুলির কারণে শরীরের কোষগুলির DNA মেরামতের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে, ফলে ক্যান্সার কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে।
এছাড়া, TP53 জিনের পরিবর্তন বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সারের সাথে যুক্ত। TP53 সাধারণত “টিউমার সাপ্রেসর” জিন হিসাবে কাজ করে, যার অর্থ এটি অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তবে যখন এই জিন পরিবর্তিত হয়, তখন ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
তবে বংশগত উপাদানের পাশাপাশি জীবনধারা, খাদ্যাভ্যাস এবং পরিবেশগত কারণগুলিও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই, সচেতনতা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং সঠিক জীবনযাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বংশগত প্রবণতা:

কিছু পরিবারে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি দেখা যায়, । যার পেছনে বংশগত কারণ থাকতে পারে।, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে থেকে এমন কিছু জিন পেয়ে থাকে যা তাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। এই জিনগুলো উত্তরাধিকার সূত্রে আসে, তাই এক পরিবারের একাধিক সদস্যের মধ্যে ক্যান্সার দেখা দিতে পারে।

পরিবেশগত উপাদান

ক্যান্সার সৃষ্টিকারী এজেন্টদের এক্সপোজার

ক্যান্সার সৃষ্টিকারী জিনিসের সংস্পর্শে আসায় আমাদের চারপাশে এমন কিছু জিনিস থাকে যা শরীরে ঢুকলে ক্যান্সার হতে পারে। যেমন—তামাকের ধোঁয়া, অ্যাসবেস্টস (এক ধরনের নির্মাণ সামগ্রী), কিছু কৃত্রিম রাসায়নিক, আর শক্তিশালী রশ্মি (যেমন এক্স-রে বা ইউরেনিয়ামের রেডিয়েশন)। এইসব জিনিসে বারবার সংস্পর্শে এলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। কাজের জায়গা বা অভ্যাসের কারণে অনেক সময় মানুষ এগুলোর কাছে বেশি আসে।

বায়ু এবং জল দূষণ

বায়ু ও জল দূষণ আমাদের পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ দুটি দূষণই মানুষের স্বাস্থ্য, প্রাণীকূল এবং প্রকৃতির উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

বায়ু দূষণ

আমাদের চারপাশের বাতাসে ক্ষতিকর ধোঁয়া, গ্যাস, ধুলা-মাটি বা রাসায়নিক পদার্থ মিশে যায়। যেমন—গাড়ির ধোঁয়া, কলকারখানার ধোঁয়া, আগুন জ্বালানোর ধোঁয়া ইত্যাদি। ।

যানবাহন ও কলকারখানার ধোঁয়া—
যার ফলে CO₂, SO₂ এবং NOₓ-এর মতো গ্যাস নির্গত হয়।
জ্বলন্ত জীবাশ্ম জ্বালানি—
বায়ুমণ্ডলে কার্বন মনোক্সাইড ও সালফার ডাই অক্সাইড মিশে যায়।
বন কাটা —
গাছপালা কমে যাওয়ার ফলে বাতাসের বিশুদ্ধিকরণ ক্ষমতা কমে যায়

জল দূষণ:

জল দূষণ হয় যখন নদী, পুকুর, নলকূপ বা অন্য কোনও পানির উৎসে ময়লা, রাসায়নিক বর্জ্য, প্লাস্টিক বা জীবাণু মিশে যায়। এই জল যদি কেউ খায় বা ব্যবহার করে, তাহলে পেটের অসুখ, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস, এমনকি কিডনির রোগও হতে পারে।


শিল্প ও গৃহস্থালি বর্জ্য:

কলকারখানার ময়লা-আবর্জনা আর বাড়ির নোংরা বর্জ্য নদী, পুকুর বা সাগরের জলে মিশে যায়। এতে ভারী ধাতু, বিষাক্ত কেমিক্যাল আর নানান রকমের দূষিত জিনিস পানিতে ঢুকে পড়ে, যা মানুষ ও জলজ প্রাণীর জন্য ভীষণ ক্ষতিকর।


কৃষিতে রাসায়নিক ব্যবহার:

ধান-গম চাষ বা সব্জির ক্ষেতে প্রচুর কীটনাশক আর রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে সেগুলো মাটির ভিতর দিয়ে ভূগর্ভস্থ জলে মিশে যায়। এই দূষিত জল অনেক সময় আমরা টিউবওয়েল বা নলকূপ থেকে তুলে খাই, ফলে শরীরে নানা রকম অসুখ দেখা দিতে পারে।

প্লাস্টিক ও অন্যান্য কঠিন বর্জ্য:

জলের মধ্যে ফেলা প্লাস্টিক, প্যাকেট বা নানা রকমের শক্ত আবর্জনা মাছ ও জলজ প্রাণীর জন্য বড় বিপদ ডেকে আনে। এরা এগুলো গিলে ফেলে, ফলে অনেক সময় মারা যায় বা অসুস্থ হয়।
এই দূষিত বাতাসে শ্বাস নিলে আর দূষিত জল পান করলে দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে

জীবনের অভ্যাস


খাদ্যাভ্যাস ও পুষ্টির অভ্যাস:

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস আজকাল অনেকেই এমন খাবার খাচ্ছেন যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর—যেমন বেশি তেল-মসলা দেওয়া খাবার, প্রক্রিয়াজাত মাংস (হ্যান্ডেলড মিট), লাল মাংস বা কম ফল-সবজি খাওয়া। এসব অভ্যাস কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
অন্যদিকে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এমন খাবার—যেমন ফল, শাকসব্জি , পুষ্টিকর দানা ও খনিজে ভরপুর খাবার—নিয়মিত খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধে উপকার হয়।

শারীরিক পরিশ্রমের অভাব:

যাঁরা দিনে দিনে বসে থাকেন, শারীরিক কাজকর্ম কম করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে কিছু ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। নিয়মিত হাঁটা, কাজকর্ম বা ব্যায়াম শরীরের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে, শরীরের ভেতরের ব্যাথা কমায়, আর ক্যান্সার প্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়িয়ে তলে ।

অতিরিক্ত মদ্যপান:

অনেক বেশি পরিমাণে মদ্যপান লিভার, স্তন আর গলার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। মদের কিছু উপাদান শরীরের ডিএনএ-র ক্ষতি করে এবং ক্যান্সার তৈরি হতে সাহায্য করে। মদ ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে ।

অপ্রতিরোধকারী সংক্রমণ

ভাইরালজনিত রোগ :

কিছু ভাইরাল সংক্রমণ যা শরীরে ঢুকে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে , এমনটাই বিশেষজ্ঞরা বলেছেন । এইচপিভি (HPV) হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস ভাইরাস থেকে জরায়ু বা সার্ভিকাল ক্যান্সার হতে পারে।
হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের কারণে লিভারের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি (HRT):

হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি (Hormone Replacement Therapy বা HRT) হল একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যেখানে শরীরের অভ্যন্তরীণ হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য সিন্থেটিক বা প্রাকৃতিক হরমোন ব্যবহার করা হয়। এটি সাধারণত নারীদের মেনোপজ বা অন্যান্য হরমোন সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে ব্যবহৃত হয়।HRT-এর ফলে ওজন বাড়তে পারে বা পেটের চর্বি জমতে পারে।কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে HRT রক্ত জমাট বাঁধার কারণ হতে পারে, যা ফুসফুস বা পায়ের শিরায় সমস্যা তৈরি করতে পারে। ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষত পোস্টমেনোপজাল মহিলাদের জন্য, স্তন এবং ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার সহ নির্দিষ্ট টিউমারের বর্ধিত ঝুঁকির সাথে যুক্ত হয়েছে।

আয়ুর্বেদ অনুসারে ক্যান্সার কেন হয়?

আয়ুর্বেদ, ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা ব্যবস্থা, মানসিক, শারীরিক এবং আত্মিক ভারসাম্য বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেয়। এটি সুস্থতা এবং অসুস্থতার মোকাবিলার জন্য একটি সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে। যদিও আয়ুর্বেদ সরাসরি ক্যান্সারকে একটি নির্দিষ্ট রোগ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে না, তবে এটি শরীরের সামগ্রিক ভারসাম্যহীনতা ও অনিয়মকে চিহ্নিত করে, যা সম্ভবত ক্যান্সারের মতো জটিল সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। খাদ্যাভ্যাস, জীবনধারা, এবং প্রাকৃতিক প্রতিকারের মাধ্যমে শরীরের স্বাভাবিক ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করাই আয়ুর্বেদের মূল লক্ষ্য।

আয়ুর্বেদ হল প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসা পদ্ধতি, যা শরীর, মন আর আত্মার মধ্যে ভারসাম্য রাখার উপর গুরুত্ব দেয়। এই পদ্ধতি শুধুমাত্র অসুখ সারানোর চেষ্টা করে না, বরং কীভাবে সুস্থ থাকা যায়, সেটাও শেখায়।
যদিও আয়ুর্বেদে ক্যান্সারকে আলাদা করে কোনও রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি, তবুও এই শাস্ত্রে এমন কিছু কারণের কথা বলা হয়েছে, যেগুলো শরীরের গণ্ডগোল হলে ভারসাম্য নষ্ট করে কঠিন রোগ সৃষ্টি করতে পারে – যার মধ্যে ক্যান্সারের মতো জটিল রোগও থাকতে পারে।

আয়ুর্বেদের মতে, মানুষের শরীর তিনটি দোষ – ভাত (বায়ু), পিত্ত (অগ্নি), ও কফ (জল) – দিয়ে তৈরি। এই দোষগুলি আমাদের শরীরের ও মনের ওপর প্রভাব ফেলে। যখন এই দোষগুলোর মধ্যে ভারসাম্য থাকে না, তখন নানা অসুখ দেখা দেয়। ক্যান্সারকে অনেক সময় এই দোষের ভারসাম্যহীনতার ফল হিসেবেই দেখা হয়।

একটা গুরুত্বপূর্ণ শব্দ আয়ুর্বেদে হলো “আমা”, যা শরীরে জমে থাকাএই আমা আসে খারাপ খাবার, হজমে গোলমাল, অলস জীবন, অতিরিক্ত স্ট্রেস আর পরিবেশগত দূষণ থেকে। যখন হজম শক্তি বা “অগ্নি” দুর্বল হয়ে যায়, তখন শরীরে আমা তৈরি হয়। এই আমা ধীরে ধীরে রোগ ডেকে আনতে পারে। বিশেষ করে, অনিয়মিত খাবার, বেশি স্ট্রেস, অলস জীবনধারা, বা পরিবেশের দূষণ – এগুলো আমা জমার বড় কারণ।

পিত্ত দোষ, যা শরীরের মধ্যে তাপ বা জ্বালার সাথে জড়িত, তা বেশি হয়ে গেলে শরীরে অতিরিক্ত কোষ তৈরি হতে পারে, যা ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে। তাই আয়ুর্বেদে এই দোষগুলোর ভারসাম্য বজায় রাখা খুব জরুরি।

ক্যান্সারের ক্ষেত্রে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা মানে শুধু ওষুধ নয় – এর মধ্যে আছে উপযুক্ত খাওয়াদাওয়ার নিয়ম, হালকা ওষুধ, আয়ুর্বেদিক স্পাইস, যোগব্যায়াম, ধ্যান (যেমন পঞ্চকর্ম), – সবকিছু একসাথে কাজ করে শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে। যেমন হলুদ, অশ্বগন্ধা, তুলসী – এগুলো প্রাকৃতিক ভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
কিন্তু মনে রাখতে হবে, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা একমাত্র পথ নয়। ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগে আধুনিক চিকিৎসা অবশ্যই প্রয়োজন। আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিগুলো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত, মূল চিকিৎসার সাথে সম্পূরক হিসেবে।

সবশেষ আয়ুর্বেদ আমাদের শেখায় – সুস্থ থাকার জন্য চাই ভারসাম্য, সচেতনতা আর সঠিক জীবনযাপন। ক্যান্সার প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণে আয়ুর্বেদ একটি প্রাকৃতিক, মানবকেন্দ্রিক বিকল্প পদ্ধতি হতে পারে, তবে সেটা যেন কখনোই প্রথাগত চিকিৎসার বিকল্প না হয় – বরং পাশে থেকে তাকে শক্তিশালী করে তোলে।

উপসংহার

ক্যান্সার এমন এক ধরনের বহুমুখী অসুখ, যার পেছনে অনেক রকম কারণ একসাথে কাজ করে — যেমন বংশগত সমস্যা, পরিবেশের দূষণ, আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাস, শরীরের হরমোনের পরিবর্তন, অতিরিক্ত মানসিক চাপ ইত্যাদি।
এই সবকিছু মিলেই শরীরের ভেতরে একটা গণ্ডগোল তৈরি করে, যা ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
তাই, ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতন থাকা, যেসব কারণে এটা হতে পারে সেগুলো বোঝা, আগেভাগে ধরা পড়লে চিকিৎসা শুরু করা — সবই খুব গুরুত্বপূর্ণ।

আজকের দিনে বিজ্ঞান অনেকদূর এগিয়েছে। আমরা ক্যান্সার কিভাবে হয়, তা নিয়ে আরও ভালোভাবে জানতে পারছি।
এই জ্ঞান ভবিষ্যতে আমাদের এমন এক চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে, যেটা দিয়ে ক্যান্সারের মতো কঠিন রোগেরও ভালোভাবে মোকাবিলা করা যাবে।


Also read: কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসায় আয়ুর্বেদিক পদ্ধতি

Disclaimer:

This information on this article is not intended to be a substitute for professional medical advice, diagnosis, treatment, or standard medicines. All content on this site contained through this Website is for general information purposes only.