আপনার পছন্দের খাদ্য আপনার পেটের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে?

You are currently viewing আপনার পছন্দের খাদ্য আপনার পেটের  ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে?

আপনার পছন্দের খাবার কি আপনার পেটের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে?

পেটের ক্যান্সার, যাকে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারও বলা হয়, স্বাস্থ্যসম্মত জীবনের জন্য একটি বড় হুমকি। এটি বিশ্বব্যাপী অনেক মানুষের জীবন কেড়ে নেয়। যদিও পেটের ক্যান্সারের কারণ অনেক, যেমন জেনেটিক প্রভাব বা পরিবেশের নানা দিক, তবুও নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের খাওয়ার অভ্যাস বা খাদ্য পছন্দও এই রোগের ঝুঁকি বাড়াতে বা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এই আলোচনায় আমরা খাবারের ধরন আর পেটের ক্যান্সারের ঝুঁকির মধ্যে থাকা জটিল সম্পর্কটা বুঝতে চেষ্টা করব।

পাকস্থলীর ক্যান্সারের লক্ষণগুলি কী কী?

পাকস্থলীর ক্যান্সারের উপসর্গগুলো দ্রুত চিনে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে সময়মতো রোগ নির্ণয় এবং সঠিক চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয়। উপসর্গগুলো বিভিন্ন রকম হতে পারে এবং অনেক সময় এগুলো অন্যান্য কম গুরুতর সমস্যার সঙ্গে মিলেও যেতে পারে। তাই যদি কোনো অস্বাভাবিকতা বা সন্দেহজনক লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে একজন স্বাস্থ্যসেবা ডাক্তারের  সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।

পেটে অস্বস্তি:

পেটের ক্যান্সারের শুরুতেই দেখা দেয় এক ধরনের ক্রমাগত পেটে অস্বস্তি। এর মধ্যে থাকতে পারে পেটে ভরাট লাগার অনুভূতি, ফোলাভাব বা পেটে কুঁচকানো ধরণের ব্যথা। ক্যান্সার যত বাড়ে, এই অস্বস্তি তত বেশি হয় এবং অনেক সময় স্থায়ী হয়ে যায়।

অকারণে ওজন  কমতে থাকা : 

বিনা কারণ ওজন কমে যাওয়া পাকস্থলীর ক্যান্সারসহ অনেক ধরনের ক্যান্সারের একটি সাধারণ লক্ষণ। যদি কেউ নিজের খাবার বা শরীরচর্চার অভ্যাস পরিবর্তন না করেও ওজন কমে যাচ্ছে, তাহলে সেটা শরীরে কোনো গোপন রোগের সংকেত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

খাদ্যে  অনিহা : 

পেটের ক্যান্সারের কারণে ক্ষুধা কমে যাওয়া খুব সাধারণ একটি সমস্যা। অনেকেই দেখতে পারে যে তারা আগের মতো খেতে ইচ্ছে করে না, যদিও তারা নিজের থেকে খাবারে কোনো পরিবর্তন করেন না । যদি ক্ষুধা দীর্ঘদিন ধরে কম থাকে, তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের কাছে যাচাই করানো উচিত।

বমি বমি ভাব এবং বমি:

বমি বমি ভাব আর বমি হওয়া পেটের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে, বিশেষ করে যখন টিউমার বেড়ে পাকস্থলীর স্বাভাবিক কাজের ওপর প্রভাব ফেলে। যদি এসব সমস্যা দীর্ঘক্ষণ থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া দরকার।

গিলতে অসুবিধা:

পাকস্থলীর ক্যান্সার বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যনালী আর পাকস্থলীর মাঝের রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে যেতে পারে, যার ফলে গিলতে কষ্ট হয়। এই অবস্থাকে ডিসফ্যাগিয়া বলা হয়। অনেক সময় এমন অনুভূতিও হয় যেন গলার মধ্যে খাবার আটকে গেছে।

মলে রক্ত:

মলে রক্ত দেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ যা পাকস্থলীর ক্যান্সারসহ বিভিন্ন অন্ত্র ও পাচকতন্ত্রের রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। মলে রক্ত থাকলে তা সাধারণত গাঢ় বা কালো রঙের হয়ে থাকে, কারণ রক্ত পাকস্থলী ও অন্ত্রের মধ্যে পচে যায়। এই লক্ষণটি দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত, কারণ এটি অন্ত্রের কোনো রক্তস্রোত বা টিউমারের সংকেত হতে পারে। মলে রক্ত থাকা হলে দ্রুত পরীক্ষা ও চিকিৎসা শুরু করা জরুরি।

ক্লান্তি:

ক্রমাগত ক্লান্তি এবং দুর্বলতা পেটের ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণ হতে পারে। ক্যান্সার শরীরের শক্তি এবং পুষ্টি খরচ বাড়ায়, আর শরীরের সংস্থানগুলো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অন্যদিকে চলে যায়। এর ফলে একজন মানুষ সারাদিন ক্লান্ত এবং দুর্বল বোধ করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ডাক্তারকে দেখানো জরুরি, কারণ এটি কোনো গম্ভীর সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে।

জন্ডিস:

পাকস্থলীর ক্যান্সারের শেষ পর্যায়ে, টিউমার লিভার থেকে পিত্ত প্রবাহ বন্ধ করতে পারে, যার ফলে জন্ডিস হতে পারে। জন্ডিস মানে ত্বক আর চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া। এটা শরীরের বড় কোনো সমস্যা থাকার সংকেত হতে পারে।

পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি:

পেটের ক্যান্সার অর্থাৎ  পেটের   চারিদিকে  ব্যাথা বা অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। ব্যাথা  নিয়মিত হতে পারে এবং তীব্র  হওয়া ও ধরণ ও পরিবর্তিত হতে পারে। সাধারণ পাচনতন্ত্রের অস্বস্তি এবং ব্যথার মধ্যে পার্থক্য করা গুরুত্বপূর্ণ যা সময়ের সাথে অব্যাহত থাকে বা খারাপ হয়।

পেট ফুলে যাওয়া:

কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাকস্থলীর ক্যান্সারের কারণে পেটের ভেতরে অতিরিক্ত পানি জমে যেতে পারে, যাকে বলে অ্যাসাইটিস। এতে পেট ফুলে যায়, ভারী লাগে এবং অস্বস্তি হতে পারে।

তবে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে—এই সব লক্ষণ শুধুই পাকস্থলীর ক্যান্সারের জন্য হয় না। আরও অনেক সাধারণ সমস্যাতেও এমন হতে পারে। কিন্তু যদি কেউ এক বা একাধিক উপসর্গ অনেক দিন ধরে অনুভব করেন, বা লক্ষণগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে, তাহলে অবশ্যই একজন ভালো ডাক্তারকে দেখানো উচিত।

কারণ, প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে পাকস্থলীর ক্যান্সারের চিকিৎসা অনেক বেশি সফল হয়। তাই দেরি না করে সময়মতো পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

পেটের ক্যান্সার বোঝা :

পাকস্থলীর আস্তরণে যদি “ম্যালিগন্যান্ট” অর্থাৎ ক্যান্সারযুক্ত কোষ গড়ে ওঠে এবং তা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়তে থাকে, তখনই পাকস্থলীর ক্যান্সার হয়। এই রোগটা অনেক সময় শরীরে চুপচাপ বেড়ে চলে—কোনও বড় উপসর্গ ছাড়াই। ফলে যখন লক্ষণগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠে, তখন রোগ অনেকটাই এগিয়ে যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, পাকস্থলীর ক্যান্সার বিশ্বজুড়ে পঞ্চম সর্বাধিক সাধারণ ক্যান্সার। এই তথ্য আমাদের বুঝিয়ে দেয়, কেন এই রোগের পেছনের কারণগুলো ভালোভাবে জানা আর বোঝা দরকার।

খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রা, সংক্রমণ, বংশগত ইতিহাস—সব মিলিয়ে নানা কারণে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই সচেতন থাকা, সঠিক খাবার খাওয়া, এবং প্রয়োজনে সময়মতো স্ক্রিনিং করানো এই রোগ প্রতিরোধে অনেক সাহায্য করতে পারে।

পেট ক্যান্সারের ঝুঁকির উপর খাদ্যের প্রভাব: 

উচ্চ লবণযুক্ত খাবার:

পাকস্থলীর ক্যান্সারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যতালিকাগত কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া। বিশেষ করে যেসব খাবার প্রক্রিয়াজাত বা সংরক্ষিত—যেমন আচার, শুকনো মাছ, প্রিজারভ করা মাংস বা চিপস জাতীয় জিনিস—তাতে লবণের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে।

অতিরিক্ত লবণ পাকস্থলীর আস্তরণে ক্ষতি করে, যার ফলে পাকস্থলীতে প্রদাহ   বা ব্যাথা দেখা দিতে পারে। এই পরিবেশে Helicobacter pylori নামক একটি ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া আরও সহজে বৃদ্ধি পায়। এই ব্যাকটেরিয়াটি দীর্ঘদিন পেটে থাকলে পাকস্থলীর প্রদাহ, আলসার এবং ধীরে ধীরে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

তাই নিয়মিত বেশি লবণযুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস পরিহার করা, এবং তাজা, ঘরে রান্না করা খাবার খাওয়ার দিকে মনোযোগ দেওয়া পাকস্থলীর সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

প্রক্রিয়াজাত এবং লাল মাংস:

প্রক্রিয়াজাত ও লাল মাংস বেশি খাওয়ার অভ্যাস পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দিতে পারে। সসেজ, সালামি, বেকন বা টিনজাত মাংসের মতো প্রক্রিয়াজাত মাংস তৈরি করার সময় এর মধ্যে নাইট্রেট ও নাইট্রাইট নামের কিছু রাসায়নিক যোগ করা হয় সংরক্ষণের জন্য। এই উপাদানগুলো পাকস্থলীতে গিয়ে ক্ষতিকর কার্সিনোজেনে পরিণত হতে পারে, যা ক্যান্সার সৃষ্টি করতে সহায়তা করে।

এছাড়া, লাল মাংস (যেমন গরু, খাসি বা শুকরের মাংস) যখন খুব উচ্চ তাপে রান্না করা হয়—বিশেষ করে গ্রিল বা পুড়িয়ে—তখন হেটেরোসাইক্লিক অ্যামাইন (HCA) ও পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন (PAH) তৈরি হয়। এগুলো এমন যৌগ, যা শরীরের কোষের ডিএনএ-তে ক্ষতি করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।

তাই মাংস খেলে সেটা মাঝেমধ্যে এবং স্বাস্থ্যকরভাবে রান্না করে খাওয়া উচিত। প্রতিদিন এসব প্রক্রিয়াজাত বা অতিরিক্ত রোস্ট করা মাংস খাওয়া পাকস্থলীর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

কম ফাইবারযুক্ত খাবার:

প্রক্রিয়াজাত ও লাল মাংস বেশি খাওয়ার অভ্যাস পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দিতে পারে। সসেজ, সালামি, বেকন বা টিনজাত মাংসের মতো প্রক্রিয়াজাত মাংস তৈরি করার সময় এর মধ্যে নাইট্রেট ও নাইট্রাইট নামের কিছু রাসায়নিক যোগ করা হয় সংরক্ষণের জন্য। এই উপাদানগুলো পাকস্থলীতে গিয়ে ক্ষতিকর কার্সিনোজেনে পরিণত হতে পারে, যা ক্যান্সার সৃষ্টি করতে সহায়তা করে।

এছাড়া, লাল মাংস (যেমন গরু, খাসি বা শুকরের মাংস) যখন খুব উচ্চ তাপে রান্না করা হয়—বিশেষ করে গ্রিল বা পুড়িয়ে—তখন হেটেরোসাইক্লিক অ্যামাইন (HCA) ও পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন (PAH) তৈরি হয়। এগুলো এমন যৌগ, যা শরীরের কোষের ডিএনএ-তে ক্ষতি করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।

তাই মাংস খেলে সেটা মাঝেমধ্যে এবং স্বাস্থ্যকরভাবে রান্না করে খাওয়া উচিত। প্রতিদিন এসব প্রক্রিয়াজাত বা অতিরিক্ত রোস্ট করা মাংস খাওয়া পাকস্থলীর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

অপর্যাপ্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ:

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি শরীরের ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেলগুলিকে নিরপেক্ষ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি, প্রায়শই ফল এবং শাকসবজির অভাবযুক্ত খাবারে পাওয়া যায়, যা পেটে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের জন্য সংবেদনশীল হতে পারে, যা ক্যান্সারের বিকাশে সম্ভাব্য ভূমিকা রাখে।

আচার ও গাঁজানো খাবার:

কিছু খাবার সংরক্ষণের পদ্ধতি যেমন আচার বানানো বা গাঁজন প্রক্রিয়া আমাদের রান্নার ঐতিহ্যের অংশ হলেও, এতে থাকা অতিরিক্ত লবণ ও রাসায়নিক বিক্রিয়ার কারণে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। বিশেষ করে যখন বেশি পরিমাণে আচার বা গাঁজনযুক্ত খাবার খাওয়া হয়, তখন তা পাকস্থলীর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

এই ধরনের খাবারে নাইট্রোসামাইন নামের একটি রাসায়নিক যৌগ তৈরি হতে পারে, যেটিকে গবেষণায় সম্ভাব্য ক্যান্সার সৃষ্টি করতে সক্ষম (কার্সিনোজেনিক) বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। নাইট্রোসামাইন পাকস্থলীর কোষে ক্ষতি করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

অবশ্যই একেবারে আচার খাওয়া বন্ধ করার প্রয়োজন নেই, তবে নিয়মিত বেশি পরিমাণে খাওয়া এড়ানো উচিত। বিশেষ করে যদি খাদ্যতালিকায় ফল, শাকসবজি, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কম থাকে, তাহলে এই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।

অ্যালকোহল এবং তামাক:

খাবারের সঙ্গে সরাসরি না হলেও, অ্যালকোহল খাওয়া আর তামাকজাত দ্রব্য যেমন সিগারেট বা জর্দা-গুল খাওয়া পাকস্থলীর ক্যান্সারের বড় ঝুঁকি তৈরি করে। এই অভ্যাসগুলো পাকস্থলীর কোষে ধীরে ধীরে ক্ষতি করে, আর দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।

যদি অস্বাস্থ্যকর খাদ্য যেমন বেশি লবণ, প্রক্রিয়াজাত মাংস বা কম ফল-সবজি খাওয়ার সঙ্গে এই ধরনের নেশার অভ্যাস জুড়ে যায়, তাহলে ঝুঁকি আরও বাড়ে। মানে একদিকে শরীর পাচ্ছে না দরকারি পুষ্টি, আর অন্যদিকে পাচ্ছে ক্ষতিকর উপাদান।

এই কারণেই ক্যান্সার প্রতিরোধে শুধু খাওয়াদাওয়া নয়, বরং জীবনযাত্রার প্রতিটি দিকের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি – যেমন ধূমপান বন্ধ করা, অ্যালকোহল এড়ানো, এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলাই সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধ।

উপসংহার

সুস্থ জীবনযাপন এবং ক্যান্সার প্রতিরোধের পথে, কী খাচ্ছি তার সঙ্গে পাকস্থলীর ক্যান্সারের সম্পর্কটা বোঝা খুবই জরুরি। গবেষণা বলছে, কিছু খাবার যেমন বেশি লবণ, প্রক্রিয়াজাত মাংস বা রেড মিট বেশি খাওয়া—এসব ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কিন্তু তার পাশাপাশি এমন কিছু খাবারও আছে যেগুলো আমাদের রক্ষা করতে পারে।

যেমন, প্রতিদিনের খাবারে বেশি করে তাজা ফল, শাকসবজি আর পুরো শস্য রাখলে শরীর পায় দরকারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার, যা শরীরকে রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। আবার লবণ কম খাওয়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ানো, অ্যালকোহল ও ধূমপান থেকে দূরে থাকা—এই সব অভ্যাস পাকস্থলীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য খুবই জরুরি।

সবচেয়ে বড় কথা হলো, নিজের খাবার নিয়ে সচেতন হওয়া। আমরা যদি জানি কোন খাবার কী প্রভাব ফেলছে, তাহলে অনেক রোগ আসার আগেই আটকানো সম্ভব। এই সচেতনতা শুধু নিজের জন্য নয়, পরিবার, সমাজ এবং সামগ্রিকভাবে পুরো জাতির জন্যই জরুরি।

তাই, খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ভাবার সময় এখনই। স্বাস্থ্যকর খাওয়া শুধু শরীর ভালো রাখে না, ক্যান্সারের মতো বড় রোগ থেকেও সুরক্ষা দেয়। সচেতন খাদ্যাভ্যাসই হোক আমাদের ভবিষ্যতের ঢাল।

Also Read: স্ট্রেস কাটিয়ে উঠতে কার্যকর আয়ুর্বেদিক টিপস!

Disclaimer:

This information on this article is not intended to be a substitute for professional medical advice, diagnosis, treatment, or standard medicines. All content on this site contained through this Website is for general information purposes only.